the truth author

মানুষের অধিকার চাই

আমার প্রতিটি লেখা এবং প্রতিটি উক্তির মধ্যে কিছু না কিছু শিক্ষানীয় ও কারণ থাকে।

আজ আমি মানবতা সম্পর্ক কিছু লিখবো।

চেয়েছিলাম একটি ছদ্মনাম ব্যবহার করে গল্পের আকারে লিখবো। কিন্ত আমি সেভাবে না লেখে অন্যভাবে লিখবো, যাতে কিছু জিনিস তুলে ধরা যায় আমার লেখার মধ্যে দিয়ে।

চলুন শুরু করা যাক।

মানবতা কি?

মানবতা হচ্ছে-মানুষের ধর্ম। মানবতা হচ্ছে মানুষের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সবচেয়ে ভালো গুণ। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের প্রতি সমবেদনা, স্নেহ মমতা এবং নিঃস্বার্থভাবে কল্যাণকর কাজে অংশীদার হওয়ার নামই মানবতা। মানবতা হলো সাদা দুধের মতো পরিস্কার ভাবে হৃদয় থেকে মানুষকে ভালোবাসা। যে হৃদয়ে মানুষের প্রতি নেই কোনো ভেদাভেদ, নেই কোনো ধর্মবর্ণ, জাত ও সুন্দর অসুন্দর নিয়ে প্রশ্ন। নিঃস্বার্থভাবে সবাইকে একিভাবে ভালোবাসার নামই হচ্ছে মানবতা।

যে ব্যক্তির মধ্য আপেক্ষিক মানবতা কাজ করে সে হৃদয়ে কখনো মানুষের প্রতি মানবতা কাজ করতে পারে না। আপেক্ষিক মানবতা হলো মানুষের জন্য অভিশাপ।

পৃথিবীর সব প্রাণীর মধ্যে মানুষই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী। যাঁরা নিজেদের ভালো মন্দ খারাপ ভালো বোঝার ক্ষমতা রাখতে পারে।

তাই প্রত্যেক মানুষকে ধনী-গরীব সুন্দর-অসুন্দর ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবার উপরে স্থান দিয়ে মানুষকে পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিতে হবে।

জাতিসংঘের Universal Declaration of Human Rights এর ১ম অনুচ্ছেদে লেখা রয়েছে যে,

অর্থাৎ ‘জন্মগতভাবে সকল মানুষ স্বাধীন এবং সমান সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী।’

তাহলে কেনো আমরা সবাইকে ধনী-গরীব সুন্দর-অসুন্দর এবং ধর্ম দিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি করি। আমরা কেনো পারি না। জীবনের একমাত্র অবলম্বন হিসাবে মানুষকেই প্রধান্য দিতে, সে যেই হোক। জীবনে-মরণে মানবহৃদযন্ত্রে একমাত্র মানুষকেই ধারণ করতে, সে যেই হোক এবং তাঁর পরিচয় যাই হোক।

মানুষের সেবা করাই মানবতার শ্রেষ্ঠ ধর্ম।

যদি মানুষকে মন থেকে ভালোবাসতে পারেন তাহলে আপনার ধর্মপালন হয়ে যাবে।

এই মানবপ্রেমের চেয়ে বড় কোনো ধর্ম নেই। মানবতাই মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ কর্ম আর শ্রেষ্ঠ ধর্ম। এর চেয়ে বড় কাজ আজ অবধি এই পৃথিবীতে আবিষ্কৃত হয়নি।

আপনি যদি মানুষকে ভালো না বাসতে পারেন! আপনি যদি নিজের মধ্যে মানবতা জাগ্রত না করে-ধর্মপালন করে ধর্ম সেবক হতে চান, তবে জেনে রাখুন এই ধর্ম এবং আপনার উপাসনা সবই ব্যার্থ।

মানবসেবা বিহীন আপনার ধর্মের উপাসনা সবই ব্যার্থ।

যাঁর মধ্যে মানবতা জাগ্রত আছে! সে সব ধর্ম ও সব গোত্রের মানুষের জন্য সম্মানের, শ্রদ্ধার, এবং শান্তির।

যদি আমরা ধর্মের ভাই হই, তাহলে সেটা নিজ ধর্মের মানুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। আর যদি আমরা মানবতার ভাই হই তাহলে সেটা গোটা মানবজাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তাহলে কেনো আমরা ধর্মের পরে মানবতার ভাই হয়ে এই পৃথিবীকে অন্ধকার থেকে আলোকিত করতে পারি না।

যখন তোমার পাশের বাড়ীর অসুস্থ এক ব্যক্তি বিনা চিকিৎসায় কষ্টে ভুগেন।

তখন আপনি অচেনা দূরের এক শিল্পির চিকিৎসা সেবায় সোস্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করে সাহায্য চান।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন আপনার নিজ এলাকার এক মেয়ে ধর্ষনের পর হত্যার স্বীকার হয়।

তখন আপনি অচেনা দূর এক মডেলের ধর্ষণের হত্যার বিচার চান।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন আপনার পরিচিত এক বয়স্ককে সম্মান না করে অপরিচিত এক ব্যক্তির সুন্দর পোষাক ও টাই সুট দেখে সম্মান দেখিয়ে বলেন “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক” এবং চেয়ার থেকে উঠে তাঁকে বসতে বলেন।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন আপনার অফিসে সাধারণ জনগণকে হ্যায় প্রতিপন্ন হতে হয়। তখন একজন প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে সম্মানের সহিত দেখে চেয়ার থেকে উঠে তাঁকে বসতে বলেন।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন একটা ছেলে/মেয়ে পঁচিশ/ত্রিশ বছর পড়াশোনা শেষ করে চাকুরির ইন্টারভিউতে যাওয়ার পর তাঁর শিক্ষা না দেখে তাঁর শারীরিক গঠন, সৌন্দর্য এবং কাজের দক্ষতা দেখে, এবং শেষে চাকুরি দেওয়ার নামে অর্থ চায়।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন রাষ্ট্রের সরকারী প্রশাসন সন্ত্রাস নির্মূলের নামে সাধারণ মানুষ ও সমাজের ভালো মানুষদের হত্যা করে।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন রাষ্ট্রের প্রশাসনের জেল হেফাজতে আসামি বিনা বিচারে হত্যা হয়।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন আপনার পাশের বাড়ীর মানুষ ক্ষুধার্থ অবস্থায় রাত্রি যাপন করে।

তখন আপনি তাঁদের খোজ না নিয়ে দূর এলাকায় ত্রাণ বিতরণে মগ্ন থাকেন।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন আপনার পাশের ডাস্টবিনে কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইহুদির সন্তান ময়লা আবর্জনার মধ্যে খাবার খোঁজে জীবিকার জন্য।

তখন আপনি অন্য রাষ্ট্রের মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, সন্তানদের কষ্ট ও নির্যাতন দেখে চোখে পানি ফেলেন।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন রাষ্ট্রের সরকার ও রাষ্ট্রের সরকারি দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের জনগণদের নিরাপত্তা ও তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সোস্যাল মিডিয়ার সামনে এসে বলে আমরা জনগণের নিরাপত্তা ও তাঁদের অধিকার নিয়ে কাজ করছি। সেটা কি জনগণদের উপর মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচারের অন্তর্ভুক্ত নয়।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

জাতিসংঘ সহ বিশ্বের উন্নত দেশ গুলো যখন শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। তখন আমরা শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থা সহ তাঁদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছি, আর রাষ্ট্র অপরাধীদের বিচারের বিলম্বে অপরাধ সৃষ্টি করছে।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

আজকে যাঁরা আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমন মুসলিম কিংবা মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের জন্য কেঁদে চোখের আর নাকের পানি এক করতেছে, এই মানুষগুলোই চুপ করে মজা দেখে যখন হিন্দু, বৌদ্ধদের বাড়ীঘর কিংবা মন্দির ভাঙ্গা হয়। ধর্ম এমনই এক অদ্ভুত জিনিস যে হাজার মাইল দূরের ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ একীভূত করলেও পাশের বাসার একই ভাষাভাষি, সংস্কৃতির মানুষকে এক করতে পারে না। সেই ধর্মের মানুষ যখন মানবতার বাণী শোনায়, তখন অবাকই হতে হয়।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

যখন রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করে, জনসম্মুখে জনগণের প্রতি ভালোবাসা দেখিয় ফায়দা হাসিল করতে চায়।

সেটা কি মানবতা লঙ্ঘন নয়?

আমরা বিভিন্ন ভাবে মানুষের প্রতি নির্যাতন ও অত্যাচার করে মানবতা লঙ্ঘন করছি। কখনো ধর্ম দিয়ে। কখনো সুন্দর-অসুন্দর, ধনী-গরীব, জাত ও মর্যাদার মধ্যে দিয়ে মানুষকে হ্যায় প্রতিপন্ন করছি।

সব ধর্মই শ্রেষ্ঠ ও শান্তির কথার বলে। যদি তোমার ধর্ম শান্তির কথা ও তোমার ধর্মগুরু শান্তির কথা না বলে সমাজে অশান্তির বীজবপন করে তাহলে সে ধর্ম ও সে ধর্মগুরুকে ত্যাগ করো। কারণ শান্তির কথা ছাড়া, মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি ও মানুষ হত্যা করার চেয়ে অধর্ম আর কি হতে পারে।

মানুষের উপকার এবং মানুষকে সমানভাবে তাঁদের অধিকার ভোগ করতে সাহায্য করা এবং বলতে গেলে অলঙ্ঘনীয় সব অধিকার হলো মানবাধিকার।

যে কাজ দ্বারা মানুষের অধিকারসমূহ লঙ্ঘন হয় না, সেটাই মানবাধিকার।

মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তাঁর জন্মগত অথবা অবিচ্ছেদ্য এক অংশ। মানুষমাত্রই এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে।

তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না।

মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা।

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয়টি এখন আরো প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে, যখন আমরা দেখছি যে, মানুষের অধিকারসমূহ আঞ্চলিক যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানি ও অত্যাচারের কারণে বার বার লঙ্ঘন হচ্ছে।

প্রথমত একটি পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাঁদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে।

দ্বিতীয়ত রাষ্ট্র এবং তৃতীয়ত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে।

কখনো একজন মানুষ তাঁর অধিকার বিহীন বাচঁতে পারে না। মানুষের মানবাধিকার অধিকার হলো তাঁর বেঁচে থাকার ও সুন্দর জীবন গড়ে তোলার প্রেরণা।

বর্তমান বিশ্বে Human Rights শব্দটি বহুল আলোচিত ও বহুল প্রচলিত একটি শব্দ।

বর্তমান আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন ধরণের আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করছে যাঁর ধরুন এই পৃথিবীতে মানুষ তাঁদের হারিয়ে যাওয়া জীবন ও প্রেরণা খুঁজে পাচ্ছে এবং তাঁদের অধিকার টাও।

অন্যদিকে পৃথিবীর মতাধর শাসকরা দেশে দেশে জনগণের স্বীকৃত অধিকারগুলো পর্যন্ত অবলীলায় হরণ ও দমন করে চলছে। আর দুর্বল জাতিগুলোর সাথে সবল জাতিগুলোর আচরণ আজকাল মানবাধিকারকে একটি উপহাসের বস্তুতে পরিণত করেছে।

মানবাধিকার বা মানবতা কেবল অসহায় ও নির্যাতিত মানুষগুলোর আর্তনাদ চোখের সামনে ভেসে আসে; মানবতায় মানুষের জাত-ধর্ম-বর্ণ ধনী-গরীব, আত্বীয়-অনাত্বীয়, স্বধর্মীয়-বিধর্মীয়, সুন্দর-অসুন্দর ভেদাভেদ আসেনা।

“মানবতা” শব্দটা যেমন সহজ সাবলীল, মানবতায় মানবিক হওয়াটাও তদ্রুপ সহজ সাবলীল। মানবতাকে আলিঙ্গন করতে খুব বেশী অর্থের প্রয়োজন হয়না! প্রয়োজন একটি নির্ভেজাল মন, ও মানুষের কষ্ট অন্তর থেকে উপলদ্ধির।

আজ আফগানিস্তান, সিরিয়া, লেবানন, ফিলিস্তিন, ইরান, ইরাক, সোমালিয়া, মরক্কো, আফ্রিকা, ইয়েমন, বাংলাদেশের মানুষ ইউরোপ ও আমেরিকায় গিয়ে আশ্রয় খুঁজছে।

কেনো তারা আরব মুসলিম দেশে গিয়ে আশ্রয় চাচ্ছে না? কেনো মুসলিম হয়ে খ্রিষ্টান দেশ গুলোর মধ্যে তাঁরা আশ্রয় খুঁজছে? এই সব দেশের মানুষের নির্যাতন ও আশ্রয়ের ব্যাপারে তো আরব বিশ্ব কথা বলে না? শুধু মানবাধিকার ও মানবতার কথা ইউরোপ/আমেরিকার দেশ গুলো থেকে শুনতে পাই।

আশ্রয়হীন ব্যক্তিরা জানে কোথায় গেলে তাঁদের অধিকার ও তাঁদের মর্যাদা ফিরে পাবে। তাঁই তারা ইউরোপ আমেরিকাতে যায়, এবং আশ্রয় চায়। এবং ইউরোপ আমেরিকা তারাও জানে তাঁদের আশ্রয়ের ফলে দেশে এক সময় জঙ্গি খুন ও সন্ত্রাস সৃষ্টি হবে। তারপরেও তারা আশ্রয় দেয়। কারণ তারা তাঁদের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে তাঁদের অধিকার ভোগ করতে সাহায্য করে।

সব আশ্রয় প্রার্থী জঙ্গি সন্ত্রাস হয় না। এবং তাঁদের মধ্যে কিছু আশ্রয় প্রার্থী আছেন ইউরোপ/আমেরিকার মানুষের আচরণ ও মানবিকতা দেখে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান হয়ে জীবন যাপন করতে শুরু করেন নিজ ইচ্ছায়।

তাই তাঁদের আচরণে ও মানবিকতায় ইউরোপ/আমেরিকায় অবস্থানরত মুসলিমদের কাছে খ্রিষ্টান ধর্ম উৎকৃষ্ট হয়ে উঠে এবং অনেক মুসলিম একসময় খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করতে থাকে স্বেচ্ছায়।

মানবতা শুধু ইউরোপ/আমেরিকাতে দেখতে চাই না, চাই গোটা বিশ্বে। পৃথিবীর একটি কোণায় যাতে একটি মানুষ তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।

মানুষের পৃথিবীতে মানুষের জন্য মানবতা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও জরুরি। কিন্তু কিছুসংখ্যক মানুষ এটি কিছুতেই বুঝতে পারছে না। এরা ধর্মের নামে মানুষহত্যা করছে। এরা ধর্মের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ঘোষণা করে অসহায় মানুষকে হত্যা করছে। নারী ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করে পৃথিবীতে আরও বেশী পাশবিকতার জন্ম দিচ্ছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকৃতি দূষিত করছে। অথচ এক সময় তারাই মানবতার কথা বলে হুঙ্কার দেয়।

তখনই হয় মানবতা লজ্জিত।

আপনি ধার্মিক হতে চাইলে সবার আগে মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষকে অবজ্ঞা করে কেউ কখনো ধার্মিক তো দূরের কথা মানুষও হতে পারবে না। কারণ, মানুষই সর্বশ্রেষ্ঠ জীব।

আপনি যে-ধর্মেরই অনুসারী হন না কেন—আপনি সবার আগে সর্বধর্মের মানুষকে ভালোবাসুন। আর সকল ধর্মের উপরে মানুষ আর মানবতাকে স্থান দিন। তাহলে আপনি প্রকৃত ধার্মিক ও মানুষ হতে পারবেন।

মানবতাকে রক্ষা করতে পারলেই পৃথিবীর মানুষ রক্ষা পাবে, এবং পৃথিবীর মানুষ তাঁদের অধিকার খুঁজে পাবে।

মানুষ যখন মানবতার আসায় এবং তাঁদের অধিকার ফিরে পাওয়ার আশায় একদেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দিয়ে মানবতার খোঁজে আশ্রয় নেয়। এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো তাঁদের আশ্রয়হীনদের আশ্রয় দেওয়ার চেষ্ট করে! বাসস্থন, কাপড় ও খাবার সহ ইত্যাদিভাবে তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।

সংস্থার যাঁরা দায়িত্বশীল এবং আশ্রয়হীনদের বাসস্থনের যাঁরা দায়িত্বশীল সংস্থার মানুষ গুলো এবং যাঁরা টাকার জন্য সেই সব সংস্থার শাখা গুলোতে কাজ করেন। আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে আপনার আচরণে এবং আপনার কর্মের দ্বারা এবং আপনার জিহ্বার কথার দ্বারা কোনো আশ্রয়হীন ব্যক্তি কষ্ট না পায়।

এবং মানবিক সংস্থার দায়িত্বশীলদের খেয়াল রাখতে হবে যাঁরা সেখানে চাকুরী করে তাঁদের জীবিকার জন্য চাকুরি ও টাকা প্রয়োজন আছে, তবে সেই সাথে তাঁদের মধ্যে মানুষের প্রতি মানবিকতা কাজ করে কিনা সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। শুধু টাকার জন্য মানবিক সংস্থা গুলোর শাখায় প্রশাখায় কাজ করলে তাঁদের থেকে আশ্রয় গ্রহণ ব্যক্তিরা ভালোভাবে সুন্দর আচরণ আশা করতে পারবে না। যা আশা করবে এবং যা পাবে সেটা হলো মুখ থেকে সুন্দর আচরণ ও মুখ থেকে আশ্রয়হীনদের প্রতি হাসি, যা অন্তর থেকে নয়।

যদি আশ্রয় প্রার্থীরা তাঁদের নিজের দেশ ত্যাগ করে অধিকারহীন ভাবে। আর আপনার দেশে এবং আপনার সংস্থায় এসে সাহায্যের আসা করে এবং মানবিকতার জন্য সাহায্য পেয়ে যদি সে কোনো ভাবে বৈষম্যের স্বীকার হয়।

তাহলে সেটা কি বলবেন?

পৃথিবীর বিভিন্ন মানবিক আশ্রয় সেল্টারে ও মানবিকতার রাষ্ট্র গুলোর মধ্যে যদি মানুষ বিভিন্ন ভাবে হ্যায় প্রতিপন্ন ও বৈষম্যেরস্বীকার হয়।

তাহলে সেই সময় মানবিকতা ও আন্তর্জাতিক আইনের সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যা তারা লঙ্ঘন করছে। সেটাও একজন অসহায়দের প্রতি মানবতা ভূলুণ্ঠিত হওয়া।

মনে রাখবেন একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র ও শক্তিশালী ব্যক্তিকে মানুষের তৈরী আইন দ্বারাও ক্ষমতাহীন করা যায়।

আমরা ক্ষমতা পেয়ে মানুষের অধিকার ও মানুষকে নিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি না করে, মানুষের অধিকারের জন্য কাজ করি। মানুষের পৃথিবীতে মানুষের অধিকার ভোগ করতে সাহায্য করি। তাঁদের অধিকার থেকে আমরা তাঁদের বঞ্চিত না করি।

ধর্মবর্ণ, সুন্দর-অসুন্দর, ধনী-গরীব, ক্ষমতাবান ও ক্ষমতাহীন ব্যক্তির সবার মর্যাদা পৃথিবীর বুকে সমান না হলেও মৃত্যুর পর সবাইকে মাটির নীচে যেতে হয় এক্ষেত্রে সবার অধিকার সমান।

তাই আমি চাই পৃথিবীর বুকে সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটা শিক্ষিত ও মানবিক মানুষ হিসেবে নিজেকে নিজেই গড়ে তুলতে মানবতাকে নিজের মধ্যে জাগ্রত করে একটা সুন্দর পৃথিবী ও প্রকৃতি উপহার দিতে।

মনে রেখো একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানবতা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করার।

যেখানে জয় হয়েছে মানবতার,

সেখানে ধ্বংস হয়েছে সব ষড়যন্ত্র।

যেখানে জয় হয়েছে মানবতার,

সেখানে জাগ্রত হয়েছে মানবধর্ম।

ধর্মের নামে মানবতা লঙ্ঘন–

সেটা নয়তো মানবতা।

অধর্ম করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা, সেটার নাম হয় কি মানবতা?,

জয় হোক মানবতার!

সাম্যতা জাগ্রত হোক একি ভ্রাতৃত্বে।

জয় হোক মানবতার!

মোদের ধর্ম হোক মানবধর্মের।

Exit mobile version