ভালোবাসার শুরুটা ছিল আমার জীবনে খুব সুন্দর।
আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি আজও তোমার অজান্তেই আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি তা বলে প্রকাশ করতে পারবো না। তবে এতটুকু বলবো যদি পর হতেই চাইছিলে তো কেনো আমাকে ভালোবেসে ছিলে? কেনো আমার বিশ্বাসে নিঃশ্বাসে অনুভূতিতে ভালোবাসার জন্ম দিয়েছিলে?
আমি বলছিলাম দিহানের কথা, যে দিহান একটা মেয়ের প্রেমে পড়েছিল, প্রথম দেখাতেই থাকে ভালোবেসে ফেলেছিল তাঁর অজান্তেই। একে অপরের সাথে কথা বলার পর। দিহান বললো আপনার মোবাইল ফোনের নম্বরটা দিবেন আমাকে যদি আমাকে বিশ্বাস করেন। মেয়েটি বললো হ্যাঁ বিশ্বাস করি! তবে আপনার ফোনের নম্বর দেন আমাকে, আমি বাসাতে গিয়ে আপনাকে ফোন দেবো। এই বলে মেয়েটি দিহানের মোবাইল ফোনের নম্বরটা নিয়ে নিল মেয়েটির নম্বরটা না দিয়ে।
মেয়েটি বাসাতে যাওয়ার পর দিহানকে ফোন দিল, দিহান আর তাঁদের মধ্যে কথা বলা শুরু হতে লাগলো, এই ভাবে এক মাস পাড় হওয়ার পর দিহানকে মেয়েটা বললো এটা আমার আম্মুর নম্বর। আমি তোমার কথায় ও ব্যবহারে বিশ্বাস করতেছি এখন, তাই আজকে আমার মোবাইলের নম্বর দেবো আপনাকে। তাই মেয়েটি তাঁর মোবাইল ফোনের নম্বর দিলো কথামতো দিহানকে।
মেয়েটির নাম ছিলো বৃষ্টি! দিহান মেয়েটিকে খুব ভালোবাসতে লাগলো মেয়েটির কথাবার্তা আর আচরণ দেখে। বৃষ্টিও দিহানকে ভালোবাসতে লাগলো ধীরে ধীরে দিহানের ব্যবহার ও সততা দেখে।
এই ভাবে বৃষ্টি ও দিহানের মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়!
দিহান এই ভাবে ভালোবাসতো বৃষ্টিকে যেই ভাবে মাটি ছাড়া গাছে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব, ঠিক সেইভাবে দিহান বৃষ্টির ভালোবাসা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব।
দিহান বৃষ্টিকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন বুনে ছিল নিজ মনের ভূখণ্ডে, বৃষ্টির জন্য জায়গা ছিল তাঁর মনে বিশাল সাগরের সমান। সাগরে যেমন হালকা গোলা পানি পুরো সাগরকে গুলা করতে পারে না, ঠিক সেইভাবে বৃষ্টির ছোটখাটো ভুল গুলো দিহানের মনে ক্ষতবিক্ষত করতে পারতো না। সব ভুল গুলো হাসিমুখে মেনে নিয়ে ভালোবাসাতো বৃষ্টিকে নিজের মতো করে। কখনো দিহান ভাবতো না বৃষ্টিকে ছাড়া তাঁর একমুহূর্ত কাটানো নিঃশ্বাস হবে তাঁর জীবনে।
কিন্তু নিয়তি সময় ও পরিস্থিতি দিহানের থেকে বৃষ্টিকে পৃথক করে দেয়, পৃথক করে দেয় দিহানের ভালোবাসা ও স্বপ্ন গুলো থেকে। দিহান ভালোবাসা হারানো শোকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছিল, না পারে ব্যথা দেখাতে আর না পারে ব্যথা কাউকে বলতে, নিজের ব্যথা নিজের বুকে চাপিয়ে বয়ে ভেরায়, ভিতরে কষ্টকে চাঁপা দিয়ে লোকালয়ে হাসিমুখে, কখনো কেউ বুঝতে পারেনি এই হাসি মাখা দিহানের ভিতরে একটা ভালোবাসা হারানো শোকে সে ক্ষতিগ্রস্ত।
দিহান ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে একা রুমে থাকলেই বিভিন্ন চিন্তা বিভিন্ন স্মৃতি ভালোবাসার মানুষটির সাথে চোখে ভাসতে শুরু করে, সে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে লাগলো।
তাই এক সময় সে ভাবলো আমি এইভাবে রুমে একা থাকলে আমার নিজের জীবনে ঝুঁকি থাকবে তাই আমি সারাদিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় দেই হাসি খুশি তাঁদের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করি। এই ভেবে সে বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে লাগলো, দিন শেষে রাতে বাড়িতে আসলেই ভালোবাসার মানুষটির স্মৃতি চোখের কোণে হাসতে লাগে এইভাবে সে খুব বেশি কষ্ট পায় এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে লাগে। কিছুই ভালোবাসার মানুষটিকে ছাড়া সে ভালো থাকতে পারছে না।
এইভাবে সে ভালোবাসা হারানোর শোকে দের বছর অতিক্রম করলো ভালোবাসার মানুষটি আবার আসবে ভেবে। কিন্তু ভালোবাসার মানুষটির আর আসার খবর মিললো না।
এই ভাবে অপেক্ষা করতে করতে ভালোবাসার মানুষটিকে হারানোর শোকে দিহানের মৃত্যু হলো।
তবে শারীরিক ভাবে দিহানের মৃত্যু হয়নি, হয়েছে একটা বিশ্বাসের, হয়েছে একটা ভালোবাসার, এবং স্বপ্নের। এবং পরিশেষে ভালোবাসার প্রতি সুন্দর মন-মানসিকতার মৃত্যু।
তাই লেখক বলেছেন!
যে প্রকৃতভাবে কাউকে একবার ভালোবেসেছে সেই জানে প্রকৃত ভালোবাসা কি এবং বিচ্ছেদের কষ্ট কি।
দিহান বৃষ্টিকে হারিয়ে বিচ্ছেদের কষ্টে একটা কবিতা আবৃত্তি করে নিজের না বলা কথা প্রকাশ করলো।
ভালোবাসি আজও তোমায় ভালোবাসি,
তোমার অজান্তে আজও তোমায় নিয়ে স্বপ্ন বুনি।
জানি সেই স্বপ্নটা আমার মিথ্যা ভ্রম-কষ্টেরই সঙ্গী,
কষ্ট পেতে ভালোবাসি তাইতো মিথ্যা স্বপ্ন দেখে চলি।
শান্তনা নেই মনে হারানো স্মৃতি নিয়ে,
ব্যথা কষ্টে মৌন আমি, নীরবে নিচিত্তে।
কষ্ট পেতে ভালোবাসি, তাইতো তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি।
মিথ্যা স্বপ্নে জলছি আমি-স্মৃতিকে স্বরণ করে,
কষ্ট পেতে ভালোবাসি, তাই তো তোমার কথা মনে রাখি।
ভালোবাসার কষ্ট জানে সে জন,
যে জন ভালোবেসে ছিলো মনের চিত্তে আপনজনাকে।
ভালোবাসার স্মৃতি ভুলতে পাড়া হয় কঠিন,
যে জন সময় কাটিয়ে ছিলো নিজ মনের স্বাচ্ছন্দ্যে বোধে।
ভুগের জন্য হয়নি যাঁদের ভালোবাসার জন্ম,
সেই জানে সংসারহীনা ভালোবাসার মানুষটি হারানোর দুঃস্বপ্ন ব্যথার কষ্ট।
ভালোবাসি আজও তোমায় ভালোবাসি,
তোমার অজান্তেই আজও পথ চেয়ে থাকি।
বল একবার ফোন করে আসবে ফিরে,
সব ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করে নিবো তোমায় আপন করে।
যদি হয় বিয়ে কবু-
লজ্জা করবে না আমার কাছে আসতে তবু।
যদি থাকো অশান্তিতে-ফিরে আসো আমার কাছে,
চেষ্টা করবো আমার সর্বোচ্চ ভালোবাসা দিয়ে তোমায় সুখি রাখতে।
তবুও হবোনা পরিবর্তন তোমার কষ্ট দেখে আমি।
ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করে,
আপন করে নেবো তোমায় আমার ভালোবাসার প্রাঙ্গনে।
কারণ ভালোবাসি আজও তোমায় ভালোবাসি।
তোমার অজান্তেই আজও খুব ভালোবাসি।
একটা কঠিন গল্প ছিলো দিহানের থেকে বৃষ্টি পৃথক হওয়ার, যার গল্প এখানে লেখা হয়নি। সেই গল্পে বৃষ্টি বিশ্বাসঘাতক নয় বলে আজও দিহান বৃষ্টিকে ভালোবাসে। সময় এবং পরিস্থিতি বৃষ্টিকে দিহানের থেকে পৃথক করে দেয়। কিন্তু বৃষ্টি বিশ্বাসঘাতক না হলেও সে দোষী ছিলো।
এই গল্প বলবো অন্যদিন, আজ এখানেই শেষ।
সমাপ্ত