the truth author

ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে কি?

আজ আমি ধর্ম সম্পর্কে তেমন কিছু লিখবো না।

আজ আমি ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে লিখবো যা আমি বলতে চাই।

 

যেহেতু আমি ইসলাম ধর্মেরি একজন সে জন্য হয়তো অনেকেই আমার ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। যেহেতু আমি একটি ধর্মে বিশ্বাস এনেছি।

 

আপনারা যাই ভাবেন আমি আমার মতো করে লিখবো।

 

আমি আপনাদের জন্য বলছি! হয়তো আমার থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা আপনারা আশা করতে পারেন না। যেহেতু আমি একটি ধর্মে বিশ্বাস এনেছি। কিন্ত একটি ধর্মে বিশ্বাস আনার ধরুন কি তাঁর থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা আশা করতে পারেন না? প্রশ্ন আপনাদের কাছে!

 

ধর্মে বিশ্বাসীরাই ধর্ম নিরপেক্ষতার জন্য আন্দোলন করছে! ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাই সব ধর্মের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সব ধর্মের প্রতি ভেদাভেদ ভুলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, এবং তাঁর জন্য আন্দোলন করছে।

 

তোমাকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্ম নিরপেক্ষ হতে হবে এমনটা বলিনা আমি। তোমাকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের ধর্মে থেকেই নিরপেক্ষ চিন্তার দ্বারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে তোমার মধ্যে নিরপেক্ষ চিন্তা ভাবনা থাকা প্রয়োজন।

 

ধর্ম নিরপেক্ষ মানে তুমি কোনো ধর্মে বিশ্বাসী না এমনটা না! যা আজ অনেকেই মনে করে।

 

নাস্তিকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই দুটি শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে৷ একজন নাস্তিক আসলে কে? এবং নাস্তিকতার ব্যাখ্যা কি? ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কি বোঝায় এবং তাঁর ব্যাখা কি? এই  দুটি বিষয় যে একে অপরের চেয়ে একেবারেই আলাদা, সেটা আমাদের বুঝতে হবে। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে নাস্তিকতা সেটা আমাদের মাথা ও চিন্তাভাবনা থেকে দূর করতে হবে।

 

ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে নাস্তিকতা নয়।

 

আমি যেহেতু ধর্ম নিরপেক্ষ নিয়ে এখন লিখতেছি তাই নাস্তিকতার আলোচনা এখন করতে চাই না।

 

তবে শর্টকাট বলে দিতেছি নাস্তিকতা মানে কি?

নাস্তিকতা মানে যে কোনো ধর্মে বিশ্বাসী ও ইশ্বরে বিশ্বাসী ও ইশ্বরের সৃষ্টিয়ে বিশ্বাসী না, তাকেই নাস্তিক বলে।

 

ধর্মনিরপেক্ষ মানে কি?

 

ধর্ম নিরপেক্ষবাদ বা ইংরেজি Secularism শব্দটির বিস্তৃত অর্থ রয়েছে। তবে ধর্ম নিরপেক্ষবাদ বলতে সাধারণ রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। যেমন রাষ্ট্রকে ধর্ম বা ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে থেকে পরিচালনা করাকে বোঝানো হয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের উপর নির্ভরশীল হয়ে রাষ্ট্রের আইন পরিচালিত হবে না। এছাড়া ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাষ্ট্র কোনো ধর্মকেই পক্ষপাত করবে না এবং কোনো ধর্মের মানুষদেরই। এই মতবাদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রের সরকার কোনরূপ কারোর ধর্মে ধর্মীয় হস্তক্ষেপ করবে না, এবং রাষ্ট্রের সরকার কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোন ধর্মকে কোন প্রকার অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করবে না। কাউকে ধর্ম পালনে বাধ্য করা হবে না। সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। এবং সকল ধর্মের বিশ্বাসীগণ তাঁদের বিশ্বাস অনুসারে তাঁদের ধর্ম পালন করবে এবং রাষ্ট্র তাঁদের ধর্ম পালনে তাঁদের নিরাপত্তা ও স্বাধীন ভাবে ধর্ম পালনে সাহায্য করবে।

 

ইতিহাস থেকে জানা যায় ধর্মনিরপেক্ষতা বা Secularism এই শব্দটি ১৮৫১ সালে ব্রিটিশ লেখক জর্জ জ্যাকব হোলিওক (১৮১৭-১৯০৪) প্রথম ব্যবহার করেন। জর্জ জ্যাকব ধর্মের কোনো রকম সমালোচনা ছাড়া, সমাজে শৃঙ্খলা আনয়নের জন্য তাঁর এই ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা প্রকাশ করেন। তিনি এই মতবাদকে আরো বিস্তৃত করেন এবং বলেন যে “ধর্মনিরপেক্ষতা খ্রীষ্টধর্মের বিরুদ্ধের কেনো মতবাদ নয়। এটি একটি স্বাধীন সত্ত্বা। ধর্মের অস্তিত্ব নিয়ে এটি কোনো প্রশ্ন তোলে না, কিন্তু অন্যদের ধর্মনিরপেক্ষ হতে উৎসাহিত করে।”

 

ধর্ম নিরপেক্ষ আমাদের শেখায় অন্য ধর্মের প্রতি নিজ ধর্মের মতো সমান অধিকার এবং সমান মর্যাদা স্থাপন করতে।

 

প্রত্যেক ধর্মের মানুষকে অবশ্যই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেক ধর্মকে নিজ ধর্মের মতো মর্যাদা ও সম্মান করার জন্য ধর্ম নিরপেক্ষ হওয়া চাই এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার ব্যাখ্যা জানা চাই।

 

ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে নাস্তিকতা নয় এটা আমাদের বুঝতে হবে।

 

ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে ধর্ম ব্যবসায়ী ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। তাঁদের দ্বারা কখনও ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না।

 

ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে ধর্ম নিয়ে ষড়যন্ত্র ও আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের হ্যায় প্রতিপন্ন কারীদের রাষ্ট্র চিহ্নিত করে তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এতে করে রাষ্ট্র থেকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও সহিংসতা দূর হবে। এবং বর্তমানে প্রত্যেকটা রাষ্ট্রকে তাঁদের আঞ্চলিক প্রশাসনের মাধ্যমে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থেকে কিভাবে মানুষ মুক্ত হতে পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কারণ বেশিরভাগ আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রাষ্ট্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং ধর্ম নিরপেক্ষ নিয়ে প্রশ্ন উঠে। তাই আঞ্চলিক ভাবে মানুষের মধ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং তাঁর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দূর ও ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একে অন্যের ধর্ম ও ধর্মের মানুষের প্রতি বিশ্বাস ও সম্মান প্রতিষ্ঠা হবে।

 

কখনো রাষ্ট্রের ধর্ম অনুসারী মানুষদের সংখ্যালঘু বলে তাঁদের বিচার করো না।

 

আমি আগে একটি লেখা লেখে ছিলাম।

 

“বাংলাদেশে যে ধর্ম অনুসারীদের আমরা সংখ্যালঘু বলি! ইন্ডিয়াতে তারা সংখ্যাগুরু, ভূটান, চীন, ইউরোপ সহ অন্যান্য দেশের ধর্মের অনুসারীরা যেখানে সংখ্যাগুরু, বাংলাদেশে তারা সংখ্যালঘু। আসলে আমরা যাঁদেরকে সংখ্যালঘু বলি না কেন তারা কিন্তু অন্যান্য দেশে সংখ্যাগুরু। তাই সংখ্যালঘু বলতে কোনো ধর্ম ও জাত নেই! সবাই সংখ্যাগুরু। তাই আসুন! সংখ্যালঘু বলে আমরা একটা ধর্ম ও জাতিকে অসম্মান না করি”।

 

~~~ মাহিদুল 

২৬-১১-২০২১

 

তাই আমাদের মধ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে সংখ্যালঘু বলে ধর্মকে ছোট ও তাঁদেরকে হ্যায় প্রতিপন্ন না করি।

 

এবং মানুষদের ধর্ম দিয়ে কখনো আমরা বিচার না করি।

আমার আরেকটি উক্তি এখানে লিখেছি।

“কখনো কাউকে ধর্ম দিয়ে বিচার করো না, সে কেমন?

কারণ সব ধর্মই ভালো পথ প্রদর্শন করে।

কখনো কাউকে শিক্ষা দিয়ে বিচার করোনা, সে সুশিক্ষিত?

কারণ অধিকাংশ শিক্ষিত ব্যক্তিরাই পৃথিবীকে অন্ধকারে ধাবিত করছে।

মানুষকে বিচার করো তার কর্মে, ব্যবহারে ও চরিত্রে যদিও সে গরীব হয়”।

 

~~~ মাহিদুল

০৪-০৩-২০২২

আমাদের মধ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ও ধর্মের উপর থেকে সংখ্যালঘু সংখ্যাটা দূর করতে হবে, কেননা সংখ্যালঘু শব্দটা ধর্মের পবিত্রতাকে ছোট করে। কখনো কোনো ধর্ম সংখ্যালঘু হয়না। সব ধর্মই সংখ্যাগুরু। আমাদের সব ধর্মকে সম্মান করতে হবে এবং সব ধর্মের মানুষদেরও। রাষ্ট্রের খেয়াল রাখতে হবে ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে কোনো ধর্ম যাতে বলি না হয়। ধর্ম নিরপেক্ষের নামে অন্য ধর্মের হয়ে যাতে পক্ষপাত না হয়। সব ধর্ম ও সব ধর্মের মানুষদের ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে তাঁদের অধিকার প্রতিষ্টায় সাহায্য করতে হবে। এবং কখনো রাষ্ট্রের শক্তিশালী ধর্মবিদরা অন্য ধর্মের প্রতি রাষ্ট্রের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন না তুলে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনো ধর্ম যাতে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার ও ষড়যন্ত্রের স্বীকার না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এবং এই সব ষড়যন্ত্রকারীদেরকে শক্তহাতে দমন করতে হবে রাষ্ট্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও সহিংসতা মুক্ত শান্তি ফিরিয়ে আনতে চাইলে।

আমি সব ধর্মের ধর্মবিদদের সম্মান করি। কিন্ত কেনো?

কারণ তারা নিজ নিজ ধর্মের প্রচারক। তারা নিজ ধর্মকে ভালোবাসে এবং তাঁদের ভবিষ্যত ধর্মে আসা প্রজন্মদের ধর্মের জ্ঞান ও ধর্মের শিক্ষা দিয়ে থাকে তাঁর জন্য আমি সেই সব ধর্মবিদদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করি। এবং সেই সব ধর্ম প্রচারক ও ধর্মবিদদেরকে রাষ্ট্র সঠিক মর্যাদা ও তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যাতে তাঁরা ধর্মদ্রোহী ও ধর্মবিদ্রোহীদের দ্বারা আক্রান্ত না হয়।

“একজন ধর্মবিদের মৃত্যু মানে একটা আলোর মৃত্যু। “একজন ধর্মবিদের মৃত্যু মানে একটা সমাজের মৃত্যু।

“একজন ধর্মবিদের মৃত্যু মানে একটা জাতির মৃত্যু।

তাই আমরা কোনো ধর্মের ধর্ম প্রচারকদের অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রের কারাগারে বন্দি দেখতে চাই না। অন্যায়ভাবে তাঁদের প্রতি হামলা ও নির্যাতন দেখতে চাই না। অন্যায়ভাবে তাঁদের জীবনযুকিপূর্ণ দেখতে চাই না। আমরা তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা ও তাঁদেরকে ধর্ম প্রচারে রাষ্ট্রকে তাঁদের পাশে দেখতে চাই।

ধর্ম প্রচারকরা কখনও জোর করে কাউকে ধর্মে আসার জন্য বলে না। তারা তাঁদের শিক্ষা ও তাঁদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহের ব্যাখ্যা ও শান্তির কথার দ্বারা ধর্মের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। যাঁরা তাঁদের কথা বুঝে তারাই তাঁদের কথা শুনে ধর্ম গ্রহণ করে।

ধর্ম কারোর জোরপূর্বক, কারোর ভয়ে, কারোর আর্থিক প্রলোভনে গ্রহণ করার নয়। যদি না সে ধর্মের প্রতি তোমার বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ না থাকে তবে সেটা কখনো কোনো কিছুর বিনিময়ে গ্রহণ করলে সে ধর্মের অনুসারী ধর্মের প্রতি স্থায়ী সম্মান দেখাবে না আর বিশ্বাসটাও।

এবং রাষ্ট্র ও ধর্মপ্রচারকদের নিশ্চিত থাকতে হবে কেউ যাতে জোরপূর্বক কোনো ধর্ম গ্রহণ না করে এবং কারোর ভয়ে এবং আর্থিক প্রলোভনের দ্বারা ধর্ম গ্রহণ না করে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ধর্মে ছোটবেলা থেকে ধর্ম শিক্ষা দেওয়া কেনো প্রয়োজন? ও প্রত্যকের মধ্যে ধর্মের সাধারন জ্ঞান রাখা কেনো প্রয়োজন?

আমি দেখেছি ইসলাম ধর্মে জন্মের পরে ছোট শিশুদের সকালে মক্তবে বা মাদ্রাসাতে পাঠানো হয়। এবং সেখানে ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ তারা জন্মের পরে শিখে। এবং প্রথমে তাঁদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরীফ পড়া কিভাবে পড়তে হয় তা শেখানো হয়। এবং পরিবর্তিতে ধর্মের আরো অন্যান্য বই গুলো

শেখানো হয়। এবং অনেকেই ছোট শিশুদের ইসলাম ধর্মের আলেম দিয়ে সন্তানদের ঘরে প্রাইভেটও পড়ান যাতে সন্তানদের মধ্যে ধর্মের জ্ঞান থাকে।

সনাতন ধর্মে (হিন্দু ধর্মে) সেই রকম ভাবে সন্তানদের ছোট বেলা থেকে তাঁদের ধর্মের বই শেখানো হয় না।

যদি ছোটবেলা থেকে ছেলেকে/সন্তানদের ধর্ম শিক্ষা দেই, তাহলে সে বড় হয়ে সাধু সন্ন্যাসী হয়ে সংসার ত্যাগ করে চলে যাবে! এই ভয়ে অনেকেই ছেলেকে/সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতে চান না। এতে করে কার লাভ ও ক্ষতি হলো! এই চিন্তা ভাবনার দ্বারা আপনার সন্তানের ক্ষতি ও আপনার ধর্মেরি ক্ষতি করলেন।

কিভাবে ক্ষতি হলো তা নিম্নে আলোচনা করবো!

খ্রিষ্টান ধর্মে ছোট বেলা থেকেই সন্তানরা খুব কম সংখ্যকরা ধর্মের জ্ঞান অর্জন করে থাকে এবং খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা তারা অনেকেই ধর্মের জ্ঞান অর্জন করতে চায় না। এবং তাঁদের পরিবারের পিতা মাতা থেকেই তেমন চাপও প্রয়োগ হয় না।

মনে হয়ে গেলো একজন জার্মান দার্শনিকের কথা।

জার্মান দার্শনিক ফ্রিডরিশ নিৎশে ঊনিশ শতকের শেষ দিকে খ্রিষ্টান ধর্ম পালনের হার কমে যাওয়াকে ‘ঈশ্বর মরে গেছে’ বলে অভিহিত করেছিলেন৷ কিন্ত কেনো?

ইশ্বর কখনো মারা যাননি। খ্রিষ্টান ধর্ম পালনের হার কেনো কমতেছে তার কারণ সেই ধর্মের অনুসারী ব্যক্তি নিজেরাই দায়ী! ইশ্বর নন।

কেনো আপনাদের সন্তানদের ছোটবেলা থেকে ধর্মীয় শিক্ষা ও ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে শিক্ষা ও চলতে অনুপ্রাণিত করেন না। কেনো থাকে ছোটবেলা থেকে ধর্মের জ্ঞান ও আপনাদের পবিত্র ধর্ম বাইবেল শিক্ষা ও সেই বই পড়ার প্রতি অনুপ্রাণিত করেন না। এবং তাঁকে কেনো বুঝানো হয় না এটা ইশ্বরের বাণী ও ইশ্বর থেকে আসা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ।

যদি আপনার ছেলেকে/সন্তানদের ছোট থেকে ধর্ম শিক্ষা ও ধর্মের প্রতি জ্ঞানের ও ধর্ম অনুসারে চলার শিক্ষা না দেন। তাহলে বড় হয়ে সে নাস্তিক হবে। বড় হয়ে সে ধর্মান্তরিত হবে। এর জন্য দায়ী কে হবে?

যদি আপনার ছেলেকে ধর্মের শিক্ষা দেন তাহলে সে ধর্মান্তরিত হবে না। সে বড় হয়ে নাস্তিক হবে না। এবং এর সম্ভাবনাটাও ধর্ম শিক্ষাহীন থেকে কম থাকবে।

আপনাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্মকে যদি জাগ্রত করতে চান এবং ধর্ম প্রচারের জন্য কিছু করতে চান এবং ধর্মকে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে প্রচার করতে চান। তবে আপনার সন্তানদের ধর্মশিক্ষা দেন। আপনার সন্তানকে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা ও ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ পাঠ করান ও তা মেনে জীবনযাপন করার কথা বলেন। যে সন্তান ধর্ম অনুযায়ী চলবে সে কখনো খারাপ হবে না। এবং এই সন্তান বড় হয়ে তাঁর সন্তানদেরও বলবে ধর্মের শিক্ষা অর্জন করতে। তাহলে এই ভাবে আপনার সন্তানরা ও প্রজন্মরা কখনো ধর্মহীন হবে না। এবং ধর্ম কখনো মানুষবিহীন হবে না। যদিও আমাদের জীবনের জন্য ধর্মের শিক্ষা প্রয়োজন।

ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে সেই সকল বিশেষ গ্রন্থ যাতে মানুষের জীবন যাপনের বিধান, ভাল কাজ করার পরামর্শ এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। পৃথিবীতে যুগে যুগে আসা সকল ধর্মেরই কোন না কোন ধর্মগ্রন্থ রয়েছে। মুসলমানদের কুরআন, হিন্দুদের বেদ, খ্রিস্টানদের বাইবেল, বৌদ্ধদের ত্রিপিটক, ইহুদিদের তানাখ আরো ইত্যাদি আছে আরো অন্যান্য ধর্মে।

আমি চাই প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম অনুসারে তাঁদের সন্তানদের ধর্মশিক্ষা ও তাঁদেরকে স্রষ্টার অস্তিত্ব সম্পর্কে ও স্রষ্টার সৃষ্টি সম্পর্কে অবগত ও শিক্ষা দেওয়া হোক। তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম থেকে কখনো আপনার নিজ ধর্ম পালনের হাড় কমে যাবে না, ভবিষ্যত প্রজন্ম আসার সাথে সাথে ধর্ম অনুসারীরাও বাড়তে থাকবে।

যদি আপনার সন্তানদের কোনো কারণে ধর্মের জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করেন এতে করে বর্তমান ও তাঁর থেকে ভবিষ্যত প্রজন্ম আসা সন্তানরাও ধর্ম জ্ঞানহীন জীবন অর্জন করতে পারে এবং আপনার সন্তানও ধর্মহীন/ধর্মান্তরিত ও নাস্তিক হতে পারে, কারণ তাঁর মধ্যে ধর্মের জ্ঞান নেই তাঁর জন্য।

ধর্ম নিরপেক্ষ ও ধর্ম বিশ্বাসী মানুষেরা তারা কখনো কোনো দেশ ও জাতির জন্য বোঝা নয় ও ধ্বংসের কারণ নয়।

যাঁরা সন্ত্রাসী তাঁদের কোনও ধর্ম নেই। তাঁদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসী ও ধর্মদ্রোহী ও ধর্মবিদ্রোহীরা না নিজ ধর্মের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে আর না অন্য ধর্মের প্রতি শান্তি নিশ্চিত করতে পারে। তারা সব ধর্মের জন্যই বিপদজনক ও বিষাক্ত।

আপনার সন্তানকে ধর্ম শিক্ষাদিন। ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধর্মের জ্ঞানে আলোকিত করতে ধর্ম শিক্ষায় অনুপ্রাণিত আজই করুন।

ধর্ম নিরপেক্ষতার শিক্ষা দেন। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে নাস্তিকতা নয়। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে সব ধর্মের প্রতি সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সব ধর্মের মানুষদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। নাস্তিকতা নয়।

Exit mobile version