কবিতা – আকুতি
লেখিকা মাহমুদা তাজরিন
আমি অতি দয়াশীল হয়ে বাঁচতে চাই,
কিন্তু ওরা আমাকে নিষ্ঠুর হতে বাধ্য করে।
আমি সবাইকে ভালোবেসে বাঁচতে চাই,
কিন্তু ওরা আমার মনে ঘৃণা জন্মাতে বাধ্য করে।
আমি অতি মহৎ হৃদয় নিয়ে বাঁচতে চাই,
কিন্তু ওরা বারবার আমার হৃদয়কে সংকীর্ণ করে।
আমি বারবার সামনে এগিয়ে যেতে চাই,
কিন্তু ওরা আমাকে পিছন হতে টেনে ধরে।
আমি দাঁড়াতে চাইলে ওরা আমাকে বসিয়ে রাখে,
আমি হাটতে চাইলে ওরা আমাকে থামিয়ে রাখে,
আমি দৌড়াতে চাইলে ওরা আমাকে খামচে ধরে,
আমি বলতে চাইলে ওরা আমাকে শব্দহীন করে রাখে,
আমি কিছু করতে চাইলে ওরা আমাকে নুইয়ে রাখে।
আমি বলতে পারি না চলতে পারি না
আমি দৌড়াতে পারি না –
আমি হেটে যেতেও পারি না,
আমি পারিনা মনে দয়া কিবা ভালোবাসা পুষতে,
আমি মহৎ হৃদয় নিয়ে বাঁচতে পারি না,
আমি পারি না সামনে এগিয়ে যেতে।
এই সমাজের বিবেকহীন মানুষের সাথে চলতে চলতে –
আমারও আজ বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়েছে সব-ই,
বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি আজ ওদের কড়াঘাতে।
সত্য বলি না, সত্যে চলি না,
মিথ্যার আশ্রয়ে আজ অবরুদ্ধ,
এই গোটা সমাজ আর এই আমি
মিলেমিশে হয়ে গেছি একাকার,
তাহাতে আর আমাতে, সত্যে আর মিথ্যায় –
নেই আজ কোনো পার্থক্য।
এই সমাজ শোনো বলে রাখি তোমাকে,
তোমার সাথে যুগের সাথে তালে তাল মিলিয়ে –
সত্য নয় যদি মিথ্যার আশ্রয়েই –
এভাবেই বেঁচে থাকতে হয় আমাকে,
যদি এভাবেই নিষ্ঠুর হয়ে ভালোবাসাবিহীন –
বাঁচতে হয় আমাকে, তবে বলি শোনো –
এ দায়ভার আমার নয়,
সবটা যেহেতু শিখিয়েছো তুমি –
এভাবে বাঁচার অনুপ্রেরণা তো দিয়েছো তুমিই –
তবে এর দায়টাও তুমিই নাও।
আকুতি তোমার তরে –
যতকাল বাঁচি তুমি আমাকে আগলে নাও।
সমাপ্ত
ধন্যবাদ সবাইকে লেখা গুলো পড়ার জন্য ও শেয়ার করার জন্য।