Thu, Nov 14, 2024

Have a Nice Day

0 comments 0 views
🕗: 5 minutes

পৃথিবীর আনাচে-কানাচে কত না জীবজন্তু চরে বেড়াচ্ছে, তার কয়টাকেই বা আপনি দেখেছেন? একশ? দেড়শ? বা বড়জোর তার চেয়ে খানিকটা বেশিই হবে। কিন্তু ৯ মিলিয়ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে এমন কিছু চেহারার প্রাণী রয়েছে যেগুলো দেখলে মনে হবে এগুলোর অস্তিত্ব কি আসলেই রয়েছে? তাহলে, সেরকম কিছু অদ্ভুত প্রাণী দেখতে তৈরি হয়ে যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।

 

 

স্কোটোপ্লেনস

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Scotoplanes globosa

সমুদ্রের একেবারে তলায় থাকা এইসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীর অন্য নামও রয়েছে, বিশেষ করে এগুলো “সী পিগ” বা সমুদ্রের শূকর নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তার কারণও অবশ্য সহজেই অনুমান করে নেওয়া যায়, এর চেহারার সাথে শুকরের অমিল খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আটলান্টিক, প্যাসিফিক আর ভারত মহাসাগরের দেড় থেকে ৫ কিলোমিটার নিচে এদের দেখা পাওয়া সম্ভব। সমুদ্রের তলদেশের কাঁদা থেকে এরা নিজেদের খাবার সংগ্রহ করে নেয়!

 

 

গবলিন হাঙর

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Mitsukurina Owstoni

গভীর সমুদ্রের অন্ধকার জগতের বাসিন্দা এই গবলিন হাঙরের চেহারাটা সত্যিই চমকে ওঠার মতো, যেন একেবারে সাক্ষাৎ শয়তান। লিভিং ফসিল নামে পরিচিত হাঙরের এই প্রজাতি Mitsukurinidae পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য। ১০ ফুট থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হওয়া এসব হাঙরের চেহারা ভয়াবহ হলেও এরা খুব একটা আক্রমণাত্মক নয়।

 

 

গ্রাউন্ড প্যাঙ্গোলিন

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Smutsia temminckii

বুনো আফ্রিকার অধিবাসী এই প্যাঙ্গোলিনের সারা দেহ শক্ত আইশ দিয়ে চারপাশ আটকানো। আক্রমণের আশঙ্কা করলেই এরা নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়ে বলের মতো গোলাকার আকার ধারণ করে। দুই পায়ে চলাফেরা করতে পারলেও সাধারণত খাবার খোঁজার কারণে লেজসহ চারটি পা-ই ব্যবহার করে এই অদ্ভুত সুন্দর দেহের অধিকারী প্রাণীটি।

 

 

 

লালঠোঁট ব্যাটফিশ

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Ogcocephalus darwini

আমেরিকা মহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসী এই মাছটিকে প্রথম দেখাতে মনে হবে কোনো রাগী চেহারার মহিলা ঠোঁটে লাল লিপস্টিক মেখে বসে আছেন! মৎস্য প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত হয়েও সাঁতার কাটতে অনভ্যস্ত এই প্রাণী সাধারণত সাগরের তলদেশে হেঁটে বেড়ায় এবং ছোটখাট চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ খায়।

 

 

 

ম্যান্টিস চিংড়ি

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Stomatopoda

পৃথিবীজুড়ে প্রায় ৪০০ প্রজাতির ম্যান্টিস চিংড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সমুদ্রের আনাচেকানাচে। স্টোমাটোপোডা গোত্রের এই চিংড়িগুলোর অসাধারণ কিছু দাঁড়াও রয়েছে যার সাহায্যে শিকারকে সহজেই ফুটো করে ফেলতে পারে, এমনকি বড় প্রজাতির চিংড়িগুলোও মাত্র এক গুঁতোতেই অ্যাকুয়ারিয়ামের কাঁচ ভেঙে ফেলতে পারে!

 

 

 

গোলাপী আরমাডিলো

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Chlamyphorus truncates

১৮২৫ সালে আর্জেন্টিনায় আবিষ্কার হওয়া সবচেয়ে ক্ষুদ্র প্রজাতির এই আরমাডিলোর আকার মাত্র সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার ইঞ্চি। পিঠের শক্ত আবরণ দ্বারা বেষ্টিত এই স্তন্যপায়ীর প্রধান খাদ্য পিঁপড়া এবং লার্ভা।

 

 

 

সিংহকেশর জেলিফিশ

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Cyanea capillata

জেলিফিশ প্রজাতিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই প্রাণীটি জায়ান্ট জেলিফিশ এবং হেয়ার জেলিফিশ নামেও বেশ পরিচিত। আর্কটিক, উত্তর আটলান্টিকসহ সুমেরুর কাছাকাছি শীতল পানিতে এদের দেখা মেলে। ১৮৭০ সালে ম্যাসাচুসেটসের উপসাগরে সবচেয়ে বড় জেলিফিশের খোঁজ পাওয়া যায় যার দেহ ছিল সাড়ে সাত ফুট এবং শুড়গুলোও প্রায় ১২০ ফুট লম্বা!

 

 

 

বক্সার কাঁকড়া

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Lybia

লিবিয়া গণের ১০টি প্রজাতি এই ক্ষুদ্রাকৃতির কাঁকড়াদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। মাত্র কয়েক সেন্টিমিটারের আকৃতিবিশিষ্ট এই কাঁকড়াগুলো পরিচিত বক্সিং কাঁকড়া, বক্সার কাঁকড়া এবং পম-পম কাঁকড়া হিসেবে। এরা মূলত সামুদ্রিক অ্যানিমোনদের সাথে মিথোজীবী হিসেবে বাস করে। এরা নিজেদের দাঁড়ায় অ্যানিমোনগুলোকে রেখে বিপদ থেকে রক্ষা করে, অপরদিকে অ্যানিমোনগুলো এর বিনিময়ে খাবার সংগ্রহ করে।

 

 

 

নীল ড্রাগন

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Glaucus atlanticus

খোলস ছাড়া এই মলাস্কা পর্বের প্রাণীগুলো দেখতে অনেকটা কাল্পনিক ড্রাগনের মতোই। আকারে মাত্র ১.২ ইঞ্চি এই আটলান্টিকের অধিবাসী হাত দিয়ে ধরতে গেলেই ভয়াবহ যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হবে, কারণ তার আগেই বিষাক্ত ছোট কাঁটা আপনার হাতে ঢুকে গিয়েছে যে।

 

 

 

ডুগং

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Dugong dugon

পানির নিচে বাস করা স্তন্যপায়ী এবং একই সাথে তৃণভোজী, এরকম প্রাণী পৃথিবীতে আর একটি প্রজাতিই টিকে আছে আর তা হলো ডুগং। দুঃখজনকভাবে, তেল এবং মাংসের জন্য অতিরিক্ত শিকার করার কারণে এই সুন্দর প্রাণীটি প্রায় বিলুপ্তির কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।

 

 

 

নগ্ন ছুঁচো

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Heterocephalus glaber

পূর্ব আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই নগ্ন ছুঁচোগুলোর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো মুখের সামনের বড় দুটো দাঁত। মাটির নিচ দিয়ে চলার সময় তাদের এই দাঁত একইসাথে মাটি কাটতে সাহায্য করে এবং মুখের ভিতর মাটি চলে যেতে প্রতিহত করে। এগুলোকে স্যান্ড-পাপি নামেও ডাকা হয়। এদের দেহের বিশেষ কোষের জন্য এদের কখনো ক্যান্সার হয় না। এছাড়াও অসাধারণ ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা এবং কম অক্সিজেনেও বেঁচে থাকার ক্ষমতা রয়েছে এই নগ্ন ছুঁচোগুলোর।

 

 

 

পান্ডা পিঁপড়া

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Mutillidae

পিঁপড়া নামে পরিচিত হলেও এই পতঙ্গগুলো মূলত একধরণের বোলতা। আর নামের আগে পান্ডা বসানোর কারণ হলো এদের গায়ের লোমের রঙ। সাধারণত কালো-কমলা হলেও পান্ডার মতো সাদা-কালো রঙের অসাধারণ সম্মিলনও দেখা যায়। বোলতার কামড় খাওয়া প্রবাদের সাথে এদের ক্ষমতা নিখুঁতভাবে মিলে যায়, এদের বিষাক্ত কাঁটার আঘাতে গরু পর্যন্তও মারা যেতে পারে।

 

 

 

নেকড়ে মাছ

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Anarhichas lupus

নেকড়ে মাছের ভয়াবহ দাঁত খিঁচানো মুখ দেখলে যে কেউই ভয় পেতে পারে। প্রায় সাড়ে তিন ফুট লম্বা এবং ৯০ কেজি ওজনের বিশাল আকারের মাছ প্রধানত পাওয়া যায় সুরিনামের উপকূলীয় অঞ্চলে। ছোট প্রাণী এবং অন্যান্য মাছ এদের প্রধান খাদ্য।

 

 

 

কাঁটাযুক্ত ড্রাগন

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Moloch horridus

অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি অধিবাসী মলোচ গণের একমাত্র প্রাণী পরিচিত কাঁটাযুক্ত গিরগিটি, কাঁটাযুক্ত শয়তান এমনকি পর্বতের শয়তান নামেও। ক্যামেলিয়নদের মতো এরাও নিজেদের শরীরের রঙ পরিবর্তন করতে পারে, তবে মরুভূমিতে থাকার কারণে সাধারণত এদের বাদামী বর্ণই চোখে পড়ে। প্রায় আট ইঞ্চি লম্বার এই প্রাণীর সারা দেহ ঢাকা অসংখ্য শক্ত কাঁটা দিয়ে, যার কারণে অন্যান্য শিকারি প্রাণীরা সাধারণত এদের ঘাঁটাতে আসে না। এদের আরও একটি সুবিধা হলো এরা নিজেদের দেহের যেকোনো অঙ্গ দিয়েই পানি শুষে নিতে পারে যা এদেরকে মরুভূমিতে টিকে থাকতে বেশ ভালোরকম সহায়তাই করে।

 

 

 

ব্লব ফিশ

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Psychrolutes marcidus

পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিত চেহারার প্রাণী নামে পরিচিত এই ব্লবফিশকে বলা যায় শুধুই জেলাটিনের একটু দলা। এদের এই জেলাটিনসমৃদ্ধ কোষ পানি থেকেও হালকা, এ কারণে এদের সাঁতার কাটতে কোনো রকম কষ্ট করতে হয় না। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং তাসমানিয়ার উপকূলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে এদের দেখা মিলবে খুব সহজেই।

 

 

 

আয়েআয়ে

বৈজ্ঞানিক নামঃ  Daubentonia madagascariensis

Daubentoniidae পরিবারের একমাত্র টিকে থাকা প্রজাতি আয়ে-আয়ে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ স্তন্যপায়ী নিশাচর প্রাণীও বটে। অদ্ভুত চেহারার এই লেমুরকে মাদাগাস্কারের সামান্য কিছু অঞ্চলে দেখা যায়। এদের নিয়ে বেশ কিছু কুসংস্কারও প্রচলিত রয়েছে, যেমন আয়ে-আয়েদেরকে খারাপ বলে মনে করা হয় এবং দেখামাত্র হত্যা করার মতো রীতিও চালু রয়েছে। এ কারণে এর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় IUCN আয়ে-আয়েকে বিলুপ্তপায় প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করেছে।

 

 

 

Md Efaz
Web Developer
Narayanganj Bangladesh
I am a dedicated WordPress developer with 4 years of experience on Fiverr. I specialize in developing all kinds of websites and landing pages, ensuring they are professional, responsive, and visually appealing. My goal is to bring your vision to life, whether it's a business site, e-commerce store, portfolio, or any other web solution. Let's work together to create a website that perfectly fits your needs and stands out in today’s digital landscape.
 

Leave a Comment